কিভাবে ব্যতিক্রমী কায়দায় সকল বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করবেন

সুপ্রিয় চাকরি প্রার্থী বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের জন্য বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এবং কিভাবে ব্যতিক্রমী কায়দায় সকল বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করবেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আপনারা সবাই জেনে থাকবেন যে, বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষা একটি সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় ভাল করতে হলে প্রতিটি পদক্ষেপে ভাল প্রস্তুতি ছাড়া বিসিএস ক্যাডার হওয়া সম্ভব নয়। এখানে যে কোন একটি ভুল আপনাকে প্রতিযোগিতায় লাখ+ সিরিয়াল নিচে ঠেলে দিবে। তাই বিসিএসে আবেদন থেকে শুরু করে বিসিএস ক্যাডার হওয়া পর্যন্ত আপনাকে সব কিছু সঠিভাবে পালন করতে হবে। এজন্য কোনো প্রার্থী বিসিএসে আবেদন করার সময় বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সম্পর্কে চিন্তাই পড়ে যান যে কিভাবে বিসিএস ক্যাডার চয়েসের তালিকা কিভাবে সাজানো যায়। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমি আপনাদের জন্য এখানে সুন্দর একটি গাইডলাইন উপস্থাপন করতে যাচ্ছি।

“আমি এখানে শুধু বিসিএস প্রশাসন,পররাষ্ট্র এবং পুলিশ বিসিএস ক্যাডার পছন্দ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। কারণ অন্যান্য ক্যাডারগুলোর পোস্টিং থেকে শুরু করে সুযোগ সুবিধা  পর্যন্ত প্রায় একইরকম হয়ে থাকে। অনেকেই পছন্দক্রমানুযায়ী নিম্নের ক্যাডারগুলোকে বিসিএস প্রশাসন, পররাষ্ট্র এবং পুলিশ ক্যাডারের নিচে রাখেন এবং রাখায় উচিত। তাই এখানে অন্যান্য ক্যাডারগুলো তেমন আলোচনা করা হয়নি। আমি আপনাদের সুবিধার্থে অন্য কোনো পোস্টে ঐ সব ক্যাডার নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। “

 

কিভাবে ব্যতিক্রমী কায়দায় সকল বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করবেন
কিভাবে ব্যতিক্রমী কায়দায় সকল বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করবেন

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট কি?

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট হলো প্রাথমিক পর্যায়ে যেকোন বিসিএসে আবেদন করতে গেলে বিসিএস ক্যাডার পছন্দ এর জন্য চয়েস দিতে হয়। ইহা জেনে রাখা ভাল যে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক পরিচালিত বিসিএস ক্যাডারের পদ বা সংখ্যা হলো সর্বমোট ২৬ টি। এই তালিকার মধ্যে পদানুযায়ী মর্যাদা রয়েছে। তাই কোন ক্যাডার আগে বা পরে দিবেন এজন্য অনেক প্রার্থী কনফিউশনে ভোগেন। এক কথায় বলতে গেলে বিসিএসে আবেদন করতে গেলে যে ক্যাডার তালিকা পছন্দ বা ক্রমানুযায়ী সাজিয়ে অবশেষে আবেদন সাবমিট করতে হয় তাকেই বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট বলে।  

আরো পড়ুনঃ বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে গোপনীয় ট্রিক্স জানুন

বিসিএস ক্যাডার পছন্দ কেন করবেন?

সকল বিসিএস ক্যাডার পছন্দ এর পেছনে অনেক কারণ আছে। ২৬ টি ক্যাডারের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারের ক্যাটেগরির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ক্যাডার হলো প্রশাসন ক্যাডার, পররাষ্ট্র ক্যাডার এবং পুলিশ ক্যাডার। সাধারণ ক্যাডারের ১৪ টির মধ্যে উপরে উল্লিখিত ৩ টি ক্যাডার বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করার সময় বিসিএস ক্যাডার চয়েস দিতে সবার প্রথমে প্রশাসন বা পররাষ্ট্র বা পুলিশ ক্যাডার দিতে হয়। প্রশাসন ক্যাডার পছন্দের পেছনে অনেক যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। তবে বিসিএস ক্যাডারের অন্যান্য ক্যাডারেরও সমমর্যাদা রয়েছে।

সাধারণ ক্যাডারের তালিকাঃ 

সাধারণত বিসিএস ক্যাডার তিন ভাগে বিভক্ত। ক. সাধারণ ক্যাডার; খ. টেকনিক্যাল ক্যাডার এবং গ. সাধারণ ক্যাডার বা টেকনিক্যাল বা উভয় ক্যাডার। তন্মধ্যে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সাধারণ ক্যাডারের অধীনে ১৪ টি ক্যাডার পদ রয়েছে। যেমনঃ

  1. পররাষ্ট্র
  2. প্রশাসন
  3. পুলিশ
  4. কর
  5. শুল্ক ও আবগারি
  6. নিরীক্ষা ও হিসাব
  7. আনসার
  8. সমবায়
  9. পরিবার পরিকল্পনা
  10. খাদ্য
  11. তথ্য
  12. ডাক
  13. রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক
  14. এবং বাণিজ্য ক্যাডার।

আরো দেখুনঃ বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত হিডেন তথ্য জানুন 2023

প্রফেশনাল ক্যাডারের তালিকাঃ 

প্রফেশনাল ক্যাডার হলো নির্দিষ্ট বিষয়ে স্নাতক সহ স্নাতকোত্তর পাশ করে সে বিষয়ে ক্যাডার হওয়া। বিসিএস ক্যাডারের ২৬ টির মধ্যে  প্রফেশনাল ক্যাডার ১২ টি রয়েছে।

  1. সড়ক ও জনপথ
  2. গণপূর্ত
  3. জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল
  4. বন
  5. স্বাস্থ্য
  6. রেলওয়ে প্রকৌশল
  7. পশুসম্পদ
  8. মৎস্য
  9. পরিসংখ্যান
  10. কারিগরি শিক্ষা
  11. কৃষি
  12. সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার। 

কিভাবে বিসিএস ক্যাডার পছন্দ লিস্ট সেট করবেন করবেন 

নিম্নে দেখে নিন বিসিএস ক্যাডার পছন্দ লিস্ট সেট করবেন করবেন যেভাবে

কিভাবে-বিসিএস-ক্যাডার-চয়েস-লিস্ট-সেট-করবেন
কিভাবে-বিসিএস-ক্যাডার-চয়েস-লিস্ট-সেট-করবেন

প্রশাসন ক্যাডার কেন পছন্দ করবেন? 

সবচেয়ে সুনামধন্য এবং প্রশংসনীয় চাকরির মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার অন্যতম। প্রশাসন বিসিএস ক্যাডার পছন্দ নিয়ে অনেকের দ্বিমত থাকলেও এই ক্যাডারকে পছন্দ করার অনেক কারণ রয়েছে। আপনি যদি একটি চ্যালেঞ্জিং, সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ, ফলপ্রসূ, বর্তমান প্রেক্ষাপটের সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন চাকরিতে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার অন্যতম পছন্দ হতে পারে। তাই আপনি যদি বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর তালিকায় শুরুতে বিসিএস বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার রাখতে চান, প্রশাসন ক্যাডারকে পছন্দ করার অনেক কারণ রয়েছে। আবার অন্যান্য ক্যাডার থেকে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার পছন্দের অনেক অতিরিক্ত সুবিধাও রয়েছে। 

বিস্তারিত দেখুনঃ অনার্স থেকে বিসিএস প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া যায়?

প্রশাসন ক্যাডারদের কোথায় পোস্টিং হয়?

প্রশাসন ক্যাডার কেন পছন্দ করবেন এর উত্তর জানার আগে আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় প্রশাসন ক্যাডারদের কোথায় পোস্টিং হয়? তাহলে অনেক আবেদনকারী এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেন না। তাই ইহা জানা উচিত। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রশাসন ক্যাডারদের সাধারণত বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে প্রথম পদায়ন করা হয়। এরপর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়। আবার জেলা প্রশাসক এর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন শাখার দায়িত্ব প্রদান করে থাকেন। তাই স্থান, কাল, পাত্র ভেদে প্রশাসন ক্যাডার পছন্দের তালিকা অনেক বড়। নিম্নে ইহার গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুযোগ সুবিধা বর্ণনা করা হলো।

ক্যারিয়ারে অফুরুন্ত সুযোগ:

প্রশাসন বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করতে হলে আপনাকে ইহার পরিপূর্ণ ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানতে হবে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার পেলে আপনার ক্যাড়িয়ার গড়ার অনেক সুযোগ বৃদ্ধি করবে। কারণ একজন প্রশাসন ক্যাডার বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় পদ হলো একজন সচিব হতে পারেন। তাই বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার ক্যারিয়ার বৃদ্ধির জন্য প্রচুর সুযোগ প্রদান করে। এই পদে আপনি একজন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন এবং সরকারের সর্বোচ্চ স্তর সচিব পর্যন্ত হতে পারেন। একজন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের মাধ্যমেই বাংলাদেশ সরকার দেশকে চালাচ্ছে।

জেলা প্রশাসনে প্রশাসন ক্যাডাদের বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন ধরনের কাজে লিপ্ত থাকায় বিভিন্ন বিভাগে এবং বিভিন্ন স্তরে কাজ করতে হয় বলে এদের উপর চাপ অনেকটায় বেশি থাকে। ইহার ফলে এ ক্যাডার সর্বদা নতুন নতুন কাজ  শিখে থাকেন। 

  • একজন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরে প্রথমত সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পদে আসীন হোন। এরপর বিভিন্ন ধরণের কাজ সম্পাদন এবং প্রশিক্ষণ শেষে নির্দিষ্ট সময় অন্তে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে পদোন্নতি পান। 
  • সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে বেশ কয়েক বছর পর তা হতে পারে আনুমানিক ৩-৪ বছর পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে পদোন্নতি পান। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে যদি জেলা প্রশাসনে নিয়োগ প্রদান করা হয় তাহলে তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নামে ভূষিত হোন। 
  • আবার যদি উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর নির্দিষ্ট বছর অন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। 
  • একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর তাকে যদি মন্ত্রণালয়ে পোস্টিং দেওয়া হয় তাহলে তাকে সিনিয়র সহকারী সচিব বলা হয়। কিন্তু আবার তাকে যদি বিভাগীয় কমিশনার অফিসে পদায়ন করা হলে তাকে সিনিয়র সহকারী কমিশনার বলা হয়। 
  • এরপর একজন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার সরকারের উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং পরিশেষে সচিব হওয়ার পরে অবসর গ্রহণ করেন। তাই বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কাজের চাপ ও ক্যারিয়ারের অফূরন্ত সুযোগ রয়েছে।  

সমাজে মান সম্মান বৃদ্ধি:

একজন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার সমাজে অনেক সম্মান পায়। বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার সর্বোত্তম পছন্দ হতে পারে। প্রশাসন বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করলে অটোমেটিক সমাজে মান সম্মান বৃদ্ধি পায়। 

৪৬ তম বিসিএসঃ কিভাবে ৪৬ তম বিসিএস ক্যাডার চয়েস করবেন | সুবিধা ও অসুবিধা

বেতন এবং সুবিধা:

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার পেনশন, স্বাস্থ্য বীমা এবং অন্যান্য সুবিধাসহ সরকারের পক্ষ থেকে অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। একজন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের চাকুরীজীবী চাকরিতে প্রবেশ করার পর ৯ম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন। যাদের মোট বেতন দাঁড়ায় ২২,০০০+৪০% (তবে বাড়ি ভাড়া স্থান ভেদে সর্বনিম্ন ৭,০০০)+১৫০০= ৩২,৩০০/- টাকা সর্বিনিম্ন বেতন পাবেন। এছাড়াও একজন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার মোবাইল কোর্ট বিল, প্রশিক্ষণ ভাতা, লাঞ্চ ভাতা, জেলা প্রশাসন থেকে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন। বেতন এবং সুযোগ সুবিধার দিক দিয়ে প্রশাসন বিসিএস ক্যাডার পছন্দ অনেকেই করবেন।   

সম্মান ও প্রতিপত্তি:

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানিত পেশাগুলোর একটি। আপনি আপনার সহকর্মীদের দ্বারা এবং জনসাধারণের দ্বারা অনেক সম্মানিত হবেন এ পেশায়। আপনি যদি একটি চ্যালেঞ্জিং এবং ফলপ্রসূ ক্যারিয়ার বা বিসিএস ক্যাডার খুঁজে থাকেন, তাহলে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার একটি অভাবনীয় উদাহরণ হতে পারে। এছাড়াও বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিদেশে ভ্রমণ এবং আন্তর্জাতিক প্রকল্পে কাজ করার অসম সুযোগ রয়েছে। 

এ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের তাদের নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ, পরামর্শদান এবং কাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে করা হয়। ব্যক্তিগত ও পেশাগতভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। সমাজে মান সম্মান ও প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধির জন্য প্রশাসন বিসিএস ক্যাডার পছন্দ অনেকেরই প্রথম সারিতে থাকে। 

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার কেন পছন্দ করবেন?

বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করতে চাইলে আপনাকে আগে বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারকে ভালভাবে জানতে হবে। আপনি যদি বিশ্ব মঞ্চে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করা, নিজ  দেশের স্বার্থ প্রচার করা গুরুত্বপূর্ণ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে, সারা বিশ্বের মানুষের সাথে কাজ করতে এবং কূটনীতিতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে বিসিএস পররাষ্ট্য ক্যাডার সবচেয়ে উত্তম পছন্দ হতে পারে। নিচে বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার পছন্দের পেছনে অনেক সুবিধা রয়েছে, যেমনঃ

ভ্রমণের সুযোগ:

ইহা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারদের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ ও বিদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করা এবং দেখা করার সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তাই চাকরির পাশাপাশি ভ্রমণের একটা সুযোগ হয়ে ওঠে। পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিশ্ব মঞ্চে তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার এবং দেশের স্বার্থ প্রচার করার সুযোগ রয়েছে।

Read More: বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট | সেরা টেকনিকে ক্যাডার চয়েস

বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা:

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার কর্মকর্তারা আকর্ষণীয় বেতন-ভাতা এবং সুযোগ- সুবিধা প্যাকেজ পেয়ে থাকেন। বিদেশী পোস্টিং এর সময় কর্মকর্তারা বৈদেশিক ভাতা পেয়ে থাকেন। উল্লেখ্য যে, বিদেশে কর্মরত অবস্থায় দুই সন্তানের শিক্ষা, বাসস্থান ও চিকিৎসার খরচ সরকারি বিধি বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের সরকার বহন করে থাকে। বিদেশ সফর থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

সম্মান ও প্রতিপত্তি:

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানিত পেশাগুলোর একটি যা সহকর্মীদের দ্বারা এবং জনসাধারণের দ্বারা সম্মানিত হবেন। 

পোস্টিং এবং প্রমোশনঃ 

ঢাকার শগুন বাগিচায় অবস্থিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্য ক্যাডারের প্রথম পোস্টিং হয়। বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের প্রমোশন খুবই ভাল। তাই একজন পররাষ্ট্য ক্যাডার সহকারী সচিব হিসেবে প্রবেশনারী হিসেবে ঢুকে এরপর পদোন্নতি পেয়ে সরকারের সিনিয়র সচিব বা পররাষ্ট্র সচিব পর্যন্ত হতে পারেন। তবে দুই থেকে তিন বছর পর বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে পোস্টিং পেয়ে থাকেন। 

পুলিশ ক্যাডার কেন পছন্দ করবেন?

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট এর জন্য বাংলাদেশে পুলিশ বিসিএস ক্যাডার পছন্দ এর অনেক কারণ নিহীত আছে। নিম্নে বিসিএস পুলিশ ক্যাডার পছন্দের সবচেয়ে ভাল সুযোগ সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

সরকারি গাড়ির সুবিধাঃ

সদ্য নিয়োগ পাওয়া একজন এএসপিকে প্রশিক্ষণ শেষ করে একটি গাড়ি দেওয়া হয়। অধিকাংশ ক্যাডারের এই সুবিধা নেই। সরকারি গাড়ির অনেক সুবিধা আছে এখানে। তাই অনেকেই পুলিশ বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করে থাকেন।  

বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধাঃ

একজন পুলিশ কর্মকর্তা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। এই মিশনে পোস্টিং পুলিশ অফিসারদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার এবং জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত উচ্চতর বেতন ভাতা পাওয়ার সুযোগ দেয়। কাজ করার সময় ঝুঁকি ভাতা পান। রেশনের সাহায্যে খাবার পান। পুলিশও হাসপাতালে বা প্রয়োজনে বিদেশের কোনো হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পায়। বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধার দিক দিয়েও পুলিশ বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করা জুড়ি মেলা ভার। 

সমাজের শান্তি শৃঙ্খলায় অবদানঃ

সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরাসরি অংশগ্রহণে অবদান রাখতে পারে। সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায় দায়িত্ব পুলিশের। তাই একজন পুলিশ সবসময় চেষ্টা করে যেন সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে।  

প্রশিক্ষণঃ

বেশিরভাগ অফিসারকে বিদেশী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যারা চ্যালেঞ্জ এবং অ্যাডভেঞ্চার উপভোগ করেন তাদের জন্য এই ক্যাডার অবিশ্বাস্যভাবে মজাদার হবে।

পদোন্নতিঃ

এএসপি থেকে আইজিপি পদে পদোন্নতি পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। দেশের যে কোন জায়গায় কাজ করার সুযোগ আছে। এ ক্যাডারে প্রশাসনিক একাডেমি, সিআইডি ও র‌্যাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

পুলিশ ক্যাডারের পোস্টিং কোথায় হয়?

পুলিশ ক্যাডারের পোস্টিং সাধারণত সার্কেল অফিস, জেলা সদর, বিভাগ, জোন, পুলিশের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, পুলিশ স্টাফ কলেজ, পুলিশ একাডেমি, ট্রেনিং স্কুল, পুলিশ হেডকোয়ার্টার সহ অন্যান্য জায়গায় পুলিশ ক্যাডারের পোস্টিং হয়।

পুলিশ ক্যাডারে এন্ট্রি পোস্টের নাম কি?

পুলিশ ক্যাডারে এন্ট্রি পোস্টের নাম হলো এএসপি। একজন পুলিশ ক্যাডার সাধারণত ক্যাডারে যোগদান করার পর এএসপি পদে ভূষিত হয়ে থাকেন

পুলিশ ক্যাডারে উচ্চতা কত লাগে?

নরমালি একজন পুলিশ ক্যাডারের উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি থেকে শুরু হয়। তবে  উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এর কিছু কম হলে একাডেমিক রেজাল্ট সহ প্রার্থীর অন্যান্য দিক গুলো যেন ইতিবাচক হয়। তাই উচ্চতা যদি কিছু কমও হয়ে থাকে তাহলে অন্যান্য ইতিবাচক দিক দেখে ঐ প্রার্থীর উচ্চতা বিবেচনায় আনা যায়। 

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সর্বোচ্চ পদের নাম কি?

বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সর্বোচ্চ পদের নাম হলো আইজিপি। আইজিপি এর পরিপূর্ণ অর্থ হলো ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (Inspector General of Police).

পুলিশ ক্যাডার র‍্যাংকিং কেমন?

একজন পুলিশ ক্যাডার চাকরিতে প্রবেশের পর ASP হোন। এরপর Additional ASP পদে পদোন্নতি পান। এরপর পদোন্নতি পেয়ে SP হোন, যিনি একজন জেলার কর্তা হয়ে উঠেন। এরপর তিনি Additional DIG পদে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। এসপি পদে সফলভাবে চাকরি করার পর তিনি পদোন্নতি পেয়ে DIG হোন। ডিআইজি পদে সুনামের সাথে জব করার পর  Additional IG পদে পদোন্নতি পান এবং পরিশেষে IGP পদে আসীন হোন। 

শেষকথাঃ

পরিশেষে বলা যায় যে, এখানে আপনাদের জন্য কিভাবে বিসিএস ক্যাডার পছন্দ লিস্ট সেট করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বিসিএসে আবেদন করার সময় যদি পছন্দক্রম সাজাতে সমস্যা হয় তাহলে এখানে কমেন্ট করে জানাবেন। অথবা আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন। 

Visited 206 times, 1 visit(s) today

Leave a Comment

You cannot copy content of this page