বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত হিডেন তথ্য জানুন 2023

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা হল একটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা যা বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত। যারা বিসিএসের মতো সরকারি চাকরিতে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য বিসিএস পরীক্ষা একটি বড় সুযোগ হতে পারে। কারণ বাংলাদেশে বিরাজমান যত সরকারি চাকরি রয়েছে তার মধ্যে বিসিএসের মত নিখুঁত, সৎ, যোগ্যতাসম্পন্ন চাকরি নেই। তবে, বিসিএস ক্যাডার হওয়ার পর অফিস কর্তৃক বিভিন্ন কাজের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং বিসিএস পরীক্ষার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রস্তুতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে আমাদের মাথায় অনার্স এবং মাস্টার্স সম্পর্কে উত্তর আসবে।

কারণ অনার্স পাশ করলে বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্য হওয়া যায়। আবার অন্যদিকে কেউ যদি সেই সাথে মাস্টার্স পাশ করে তাহলে তাকেও উচ্চ শিক্ষিত বলা যায়। আসুন আজ আপনাদের জন্য বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি? সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

 

বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত হিডেন তথ্য জানুন
বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত হিডেন তথ্য জানুন

বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি?

মনে রাখবেন, বিসিএস পরীক্ষা একটি চ্যালেঞ্জিং পরীক্ষা। সফল সকল প্রার্থীদের মর্যাদাপূর্ণ এবং ভাল বেতনের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয় এখানে। আপনি যদি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করার এখনই সময়। তাই বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে আগে বিসিএস পরীক্ষা সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জানতে হবে। ইহা একটি তিন পর্যায়ের প্রক্রিয়া, যার মধ্যে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য অনুষ্ঠিত হয় প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় লিখিত পরীক্ষা এবং সবশেষে প্রার্থীদের নিয়ে মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ অনার্স থেকে বিসিএস প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া যায়?

অনার্স থেকে বিসিএস প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া যায়
অনার্স থেকে বিসিএস প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া যায়

প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হল একটি বহুনির্বাচনী পরীক্ষা যা প্রার্থীর বিজ্ঞান সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান এবং ইংরেজির গ্রামার এবং ইংরেজি সাহিত্য থেকে টুকটাক প্রশ্ন, গণিত থেকে ব্যাসিক প্রশ্ন, নৈতিকতা ও সুশাসন থেকে ধারাবাহিক প্রশ্নমালা, ভূগোল থেকেও প্রশ্ন আসে। এখানে উল্লিখিত প্রতিটি অধ্যায় থেকে গত ৩৫ তম বিসিএস থেকে শুরু করে আজ অবধি ৪৫ তম বিসিএস পর্যন্ত সর্বমোট ২০০ মার্কের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাশকৃত প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় লিখিত পরীক্ষা। আর লিখিত পরীক্ষা হল এমন এক ধরণের পরীক্ষা যা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বিসিএস ক্যাডার প্রার্থীকে মূল্যায়ন করে।

লিখিতি পরীক্ষায় সফলভাবে পাশ করা হলে তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় মৌখিক পরীক্ষা। ইহা হল একটি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার যা প্রার্থীর যোগাযোগ দক্ষতা, ব্যক্তিত্ব এবং বিসিএস এর জন্য উপযুক্ততা কিনা তা মূল্যায়ন করে। একজন বিসিএস ক্যাডার প্রার্থী সফলভাবে মৌখিক পরীক্ষায় পাশ করে থাকলে সে বিসিএস ক্যাডারের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকে। তবে এ কথা মনে রাখা ভাল যে, যে ব্যক্তি প্রথম পর্যায়েই শূন্য পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হোন, সে হয় বিসিএস ক্যাডার এবং যে শূন্যপদে নিয়োগ পায়না সে নন-ক্যাডার হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন। 

বিসিএস ক্যাডার চয়েস কিভাবেঃ বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট | সেরা টেকনিকে ক্যাডার চয়েস

বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সেরা টেকনিকে ক্যাডার চয়েস
বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট সেরা টেকনিকে ক্যাডার চয়েস

একাডেমিক সংক্রান্ত বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা : 

বাংলাদেশের বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতার জন্য একাডেমিক যোগ্যতা নিম্নলিখিতভাবে থাকতে হবে। 

  • বাংলাদেশে স্বীকৃত যেকোন একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রী থাকতে হবে। তবে কেউ যদি অনার্সের পর মাস্টার্স বা স্নাতকোত্তর পাশ করে থাকেন তাহলেও বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পন্ন হবে। বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী তেমন প্রয়োজন হয়না। 
  • কোনো একাডেমিক পরীক্ষায় এক বা একাধিক তৃতীয় শ্রেণী কাম্য নয়।

সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আপনারা যদি বিসিএস পরীক্ষা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিম্নের পোস্টগুলি ফলো করতে পারেন।

বয়স:

  • সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে একজন বিসিএস ক্যাডার প্রার্থীদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। 
  • কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং বাক প্রতিবন্ধী প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩২ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে।

এটা মনে রাখা জরুরি যে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা এর জন্য একজন বিসিএস সাধারণ প্রার্থী এবং মুক্তিযোদ্ধা বা প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের মধ্যে শুধু বয়সের দিক দিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেন বা সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন কিন্তু অন্য কোথাও তেমন সুবিধা পান না। 

৪৬ তম বিসিএসঃ কিভাবে ৪৬ তম বিসিএস ক্যাডার চয়েস করবেন | সুবিধা ও অসুবিধা

কিভাবে ৪৬ তম বিসিএস ক্যাডার চয়েস করবেন সুবিধা ও অসুবিধা
কিভাবে ৪৬ তম বিসিএস ক্যাডার চয়েস করবেন সুবিধা ও অসুবিধা

নাগরিকত্ব:

  • শর্ত থাকে যে, বাংলাদেশের নাগরিক নন এমন কোন ব্যক্তিকে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত করা যাবেনা। ইহা বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা এর পূর্ব শর্ত হিসেবে বিবেচিত। তাই একজন বিসিএস প্রার্থীদের বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
  • তবে বিসিএসে  আবেদন করার আগে পরীক্ষার জন্য বিদেশী নাগরিকদের অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।

শারীরিক:

একজন বিসিএস পরীক্ষায় আবেদনকারীকে এমন কোনো শারীরিক বা মানসিক অক্ষমতা থেকে মুক্ত হতে হবে যা তাদের একজন বিসিএস কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনে বাধা দেবে। বিসিএস ক্যাডারের দায়িত্ব পালনের জন্য শারীরিকভাবে উপযুক্ত ব্যক্তিই বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য উপযুক্ত। এর পাশাপাশি উত্তম নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। অন্যদিকে শারীরিক সুস্থতাও বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা। 

উপরিউক্ত বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা ছাড়াও প্রার্থী যে নির্দিষ্ট বিসিএস ক্যাডারের জন্য আবেদন করেছেন, সেসব বিষয় ভিত্তিক নিজেকে উপযুক্ত রাখাও বিসিএস পরীক্ষার অন্যতম যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আছে। এছাড়াও বিসিএসের অন্যান্য যোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 

বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে আরো তথ্যঃ

শুধু বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি সম্পর্কে জানলেই হবে না  বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছু টিপসও জানতে হবে আপনাকে। আমার এই ব্লগের অন্য পোষ্টে  আপনাদের জন্য বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত কিছু টিপস রয়েছে। আশা করি ভাল লাগবে। 

এখানে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে কিছু অতিরিক্ত তথ্য রয়েছে:

  • বিপিএসসির বর্তমান ঘোষণা অনুযায়ী বিসিএস পরীক্ষা প্রতি বছরে একবার অনুষ্ঠিত হবে।  
  • প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হলো একটি বহুনির্বাচনী পরীক্ষা যা একজন প্রার্থীর সাধারণ জ্ঞান, বাংলা, গণিত এবং ইংরেজির জ্ঞান পরীক্ষা করে।
  • বিসিএস পরীক্ষা হচ্ছে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা বিপিএসসি দ্বারা পরিচালিত হয়। 
  • বাংলাদেশের সকল উপযুক্ত নাগরিকদের বিসিএস পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া সীমিত সময়ের জন্য বা এক মাসের জন্যই উন্মুক্ত থাকে।
  • বিসিএস পরীক্ষা একটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক, চ্যালেঞ্জিং এবং সুনামধন্য পরীক্ষা এবং শুধুমাত্র অল্প প্রার্থীই সফল হয়। সফল হওয়ার জন্য প্রার্থীদের অবশ্যই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। 
  • বিসিএস পরীক্ষা তিনটি ধাপেঅনুষ্ঠিত হয় যেমনঃ প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভা।
  • লিখিত পরীক্ষা হলো এমন একটি পরীক্ষা যা প্রার্থীর ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবংসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিষয়ে উপর জ্ঞান পরীক্ষা করে।

শেষকথাঃ

সুপ্রিয় বিসিএস পরীক্ষার্থীবৃন্দ এতক্ষণে আপনারা বাংলাদেশে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেন। বিসিএস পরীক্ষা একটি প্রতিযোগিতা সম্পন্ন পরীক্ষা হওয়ার কারণে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে জানার কোনো বিকল্প কিছু নেই। ধন্যবাদ সবাইকে।

Visited 203 times, 1 visit(s) today

Leave a Comment

You cannot copy content of this page