
বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি কেমন?
বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি যতটা সহজ ভেবেছিলেন কিন্তু ততোটা সহজ নয়। বিসিএস পরীক্ষা মানে বিশাল প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রণীত বিসিএস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা-২০১৪ অনুযায়ী বিসিএস-এর নিম্নোক্ত ২৬টি ক্যাডারে উপযুক্ত প্রার্থী নিয়োগের উদ্দেশ্যে কমিশন কর্তৃক ৩টি ধাপে সম্পুর্ণ করা হয়।
- ১। বিসিএস প্রিলিমিনারী পরিক্ষা।
- ২। বিসিএস লিখিত পরীক্ষা।
- ৩। বিসিএস ভাইবা পরিক্ষা।
আরো পড়ুনঃ বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত হিডেন তথ্য জানুন 2023

১। প্রিলিমিনারী বিসিএস পরিক্ষার পদ্ধতিঃ
বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে প্রথমেই বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে। তাই নিম্নে বিসিএস প্রিলিমিনারী পরিক্ষার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। বিসিএস প্রিলি পরিক্ষায় ২০০ নম্বরের MCQ Type প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তারপর শূন্য পদের তুলনায় প্রার্থীর সংখ্যা বিপুল হওয়ায় লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই-এর জন্য বিসিএস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা-২০১৪-এর বিধি-৭ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন ২০০ নম্বরের MCQ Type প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণ করে থাকে। ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষা পর্যন্ত ১০০ নম্বরে প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণ করা হতো। বিসিএস পরীক্ষা বিধিমালা-২০১৪-এর বিধানমতে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষা হতে ২০০ নম্বরের ২ ঘণ্টা সময়ে ১০টি বিষয়ের উপর MCQ Type প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণের সিস্টেম প্রবর্তন করা হয়েছে।
আরো দেখুনঃ অনার্স থেকে বিসিএস প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া যায়?

২। বিসিএস লিখিত পরীক্ষাঃ
আপনি যদি বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে বাংলাদেশ কর্ম কমিশন এর ওয়েবসাইটে ঢু মারেন তাহলে সেখানে বিসিএস লিখিত পরীক্ষার পদ্ধতি সম্পর্কে খোঁজ পেতে পারেন। তাই আপনাদের জন্য এখানে বিসিএস লিখিত পরীক্ষা কিভাবে অনুষ্টিত হয় তা সম্পর্কে বলছি। প্রতিটি প্রার্থীর ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা (গড় পাস নম্বর ৫০%) গৃহীত হয়। প্রিলিমিনারি টেস্ট-এ কমিশন কর্তৃক কৃতকার্য ঘোষিত প্রার্থীদের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী ২৬টি ক্যাডার সাধারণ ক্যাডার এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার এই দুই ক্যাটাগরিতে বিভক্ত।
- ক. সাধারণ ক্যাডারের প্রার্থীদের জন্য ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা।
- খ. কারিগরি/পেশাগত ক্যাডারের প্রার্থীদের ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা।
৩। বিসিএস ভাইবা পরিক্ষাঃ
বিসিএস প্রিলিমিনারী এবং বিসিএস লিখিত পরিক্ষায় পাশ করার পর বিসিএস ভাইবা পরিক্ষা দিতে পারে একজন পরিক্ষার্থী। আপনি যদি বিসিএস ভাইভায় উত্তীর্ণ হতে চান তাহলে আপনাকে একজন বিসিএস প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিতে জানা জরুরি। বিসিএস ভাইবা পরিক্ষায় প্রথমে বিসিএস-পরীক্ষার সাক্ষাৎকার বোর্ড গঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপযুক্ততা নির্ধারণের জন্য বিসিএস পরীক্ষা বিধিমালার বিধান অনুযায়ী কমিশন নিম্নোক্তভাবে মৌখিক পরীক্ষার বোর্ড গঠন করে থাকে। আর সেই বোর্ড এর মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার নির্বাচন করা হয়ে থাকে।
বিস্তারিত পড়ুনঃ বিসিএস ক্যাডার চয়েস লিস্ট | সেরা টেকনিকে ক্যাডার চয়েস

৪। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা:
বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে হবে। তাই বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি এর মধ্যে অন্যতম পদ্ধতি হলো একজন বিসিএস ক্যাডার প্রার্থীর যোগ্যতা। একজন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা নিম্নরূপভাবে নির্ধারিত হয়।
বিসিএস পরিক্ষা দিতে মোট চার ধরনের যোগ্যতা লাগে। সকল বিসিএসের প্রার্থীদের জন্য বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা (শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বয়স) সমুহ হলঃ
- ১। শিক্ষাগত যোগ্যতা
- ২। বয়সসীমা
- ৩। নাগরিকত্ব এবং
- ৪। শারীরিক যোগ্যতা
৫। বিসিএস পরীক্ষার শিক্ষাগত যোগ্যতা কি?
বিসিএস পরীক্ষার নাম শুনলেই অনেক স্টুডেন্ট ভয় পেয়ে যায়। কারন এই পরীক্ষা দিয়ে অনেকেই হতাশ আবার অনেকেই সফল হয়েছে। তবে যতই কঠিন হোক না কেন আপনি যদি গোছালো বিসিএস প্রস্তুতি নিতে পারেন। তাহলে আপনার জন্য সহজ হবে। তবে যদি আপানার শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে। তাই নিচে থেকে বিসিএস পরিক্ষার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি দেখে নিন।
বিসিএস ক্যাডার হতে হলে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের পর চার বছরের অনার্স পাস করতেই হবে অথবা কেউ যদি তিন বছরের অনার্স বা পাস কোর্সে পড়ে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই মাস্টার্স পাস হতে হবে। শিক্ষা জীবনে একের অধিক তৃতীয় শ্রেণি (3rd Class) থাকলে বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবে না।
একজন বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা বয়স কত?
বিসিএস পরিক্ষায় আবেদন করতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা বয়স থাকতে হবে। তবে যারা সাধারণ বিসিএস ক্যাডার হবার জন্য পরীক্ষা দেবে, তারা ৩০ বছর পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে পারবে। অথচ বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজিএস) পরীক্ষায় ৩২ বছর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ওই ১৪ উপবিধি অনুসারে শিক্ষা ক্যাডারেও ৩২ বছর পর্যন্ত পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
৪৬ তম বিসিএসঃ কিভাবে ৪৬ তম বিসিএস ক্যাডার চয়েস করবেন | সুবিধা ও অসুবিধা

৬। বিসিএস আবেদনে নাগরিকত্ব:
বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতি এর মধ্যে বিসিএস আবেদনে নাগরিকত্ব বিষয়টি ভালভাবে খেয়াল রাখা হয়। শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি পার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিক নয় এমন কোন ব্যক্তি বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিদেশী নাগরিককে বিয়ে করলে বা বিয়ে করার প্রতিজ্ঞা করলে তিনি বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন না।
৭। বিসিএস পরীক্ষার শারীরিক যোগ্যতা কেমন?
বিসিএস প্রিলিমিনারী, বিসিএস লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মেডিকেল টেস্ট করানো হয়। মেডিকেল টেস্টে পাশ না করলে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া যায়না।
অনলাইনে ইনকাম ২০২৪ঃ অনলাইনে ইনকাম ২০২৪ এ আয় করার সেরা কয়েকটি উপায়

৮। বিসিএস মেডিকেল টেস্ট:
বিসিএস পার্থীর মেডিকেল টেস্টে যা দেখা হয়-
- ১। উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপ করা হয়।
- ২। দৃষ্টিশক্তি যাচাই করা হয়।
- ৩। মূত্র পরীক্ষা করা হয়।
- ৪। উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপঃ পুরুষ প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৯.৯৯ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ও ওজন যথাক্রমে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ৫৪.৫৪ কেজি হতে হবে।
- ৫। মহিলা প্রার্থীর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি। মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন ওজন ৪৩.৫৪ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৫.৪৫ কেজি হতে হবে।
শেষকথা:
প্রিয় পাঠক উপরে আমরা বিসিএস পরিক্ষা পদ্ধতি এবং বিসিএস নিয়োগ পরিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করি আজকের টপিকটি বুঝতে পেরেছেন। আজকের আলোচনা নিয়ে কোন মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনি যদি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানা থাকতে হবে।