প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কর্মসংস্থান ব্যাংক এর নিয়োগ পদ্ধতি

কর্মসংস্থান ব্যাংক হলো একটি রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত অতফসিলি ব্যাংক। ইহা অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। জানা যায়, কর্মসংস্থান ব্যাংক অতফসিলি ব্যাংক হলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে চলে। এই ব্যাংক ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বছর সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে। ইহা একটি লাভবান ব্যাংক হিসেবে বিবেচিত। এ ব্যাংকের অন্যতম সুবিধা হলো বেকার ও অর্ধ বেকারদের প্রকল্প ভিত্তিক ঋণ বিতরণ করে। কর্মসংস্থান ব্যাংকের মুল কাজ হলো ঋণ বিতরণ ও আদায় করা। এছাড়া ব্যাংকটি জেনারেল ব্যাংকিংয়ের কাজও করে। আজ এখানে আপনাদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা বা কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুবিধা অসুবিধা আলোচনা করব। 

 

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কর্মসংস্থান ব্যাংক এর নিয়োগ পদ্ধতি
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কর্মসংস্থান ব্যাংক এর নিয়োগ পদ্ধতি

কর্মসংস্থান ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা:

বাংলাদেশ সরকারের ঘোষিত ১৩ ও ১৪ গ্রেডের পদগুলোতে অন্যান্য ব্যাংকে নিয়োগের মতোই এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষা হয়ে থাকে। বিগত পরীক্ষায় দেখা গেছে ৮০টা প্রশ্নে ১০০ মার্কের এমসিকিউ ও ১০০ মার্কের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ নং গ্রেডের পদে আপনাকে কম্পিউটার টেস্টে (স্ট্যান্ডার্ড এপটিচিউড টেস্ট) উত্তীর্ণ হতে হবে। এসকল পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পর মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ ইউনিয়ন সমাজকর্মী বেতন গ্রেড | পদোন্নতি | প্রস্তুতি ও পরীক্ষা পদ্ধতি

কর্মসংস্থান ব্যাংকের নিয়োগ পদ্ধতি (প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী):

এখানে কর্মসংস্থান ব্যাংকের নিয়োগ বিধিমালা বা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কর্মসংস্থান ব্যাংকের নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

১. কর্মসংস্থান ব্যাংকে সাধারণত

  • (ক) সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে
  • (খ) পদোন্নতির মাধ্যমে এবং
  • (গ) প্রেষণে বদলীর মাধ্যমে নিয়োগ হয়।

প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় অধ্যায়, তফসিল এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯ (৩) অনুচেছদের বিধান অনুসারে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোটা সংক্রান্ত বিধানাবলী সাপেক্ষে, স্থায়ীভাবে শূন্য হয়েছে ব্যাংকের এইরূপ কোন পদে নিয়োগদান করা হবে।

২. কর্মসংস্থান ব্যাংকে বাছাই কমিটির সুপারিশ ব্যতীত নিয়োগ নিষিদ্ধ। সরাসরি বা পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগদানের সুপারিশ প্রদানের উদ্দেশ্যে, ব্যাংক এক বা একাধিক বাছাই কমিটি নিয়োগ করবে এবং বাছাই কমিটির সুপারিশ ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তিকে কোন পদে নিয়োগ করা যাবে না।

আরো দেখুনঃ কিভাবে ব্যতিক্রমী কায়দায় সকল বিসিএস ক্যাডার পছন্দ করবেন

কর্মসংস্থান ব্যাংকে সরাসরি নিয়োগের নিয়মাবলি:

নিম্নে কর্মসংস্থান ব্যাংকে সরাসরি নিয়োগের নিয়মাবলি তুলে ধরছি।

(১) কোন ব্যক্তি কোন পদে সরাসরিভাবে নিয়োগ লাভের জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হবেন না, যদি তিনি

  • (ক) বাংলাদেশের নাগরিক না হন; অথবা
  • (খ) বাংলাদেশের নাগরিক নন, এরূপ কোন ব্যক্তিকে বিবাহ করে থাকেন বা বিবাহ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে থাকেন।

(২) কোন ব্যক্তি কোন পদে সরাসরিভাবে নিযুক্ত হবেন না, যদি তার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকে এবং তার বয়সসীমা তফসিলে বর্ণিত বয়সসীমার মধ্যে না হয়।

(৩) কোন পদে সরাসরিভাবে নিয়োগ করা যাবে না, যে পর্যন্ত না তিনি

  • (ক) উক্ত পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিকে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নিযুক্ত চিকিৎসা পর্ষদ বা চিকিৎসা কর্মকর্তা তাকে স্বাস্থ্যগতভাবে উপযুক্ত বলে প্রত্যয়ন করেন ।
  • এবং (খ) এরূপ নির্বাচিত ব্যক্তির পূর্ব কার্যকলাপ যথাযথ এজেন্সীর মাধ্যমে প্রতিপাদিত হয় এবং দেখা যায় যে, ব্যাংকের চাকুরীতে নিয়োগ লাভের জন্য তিনি অনুপযুক্ত নন।

(৪) কর্মসংস্থান ব্যাংকে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে, সকল পদের জন্য দেশের রাজধানী হতে প্রকাশিত অন্তত: দুইটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দরখাস্ত আহবান করতে হবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ পদ্ধতি:

এখানে কর্মসংস্থান ব্যাংকে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত তুলে ধরছি।

  • (১) এই প্রবিধানমালার অন্যান্য বিধান ও তফসিল সাপেক্ষে, কোন কর্মচারীকে পরবর্তী পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হবে।
  • (২) কেবলমাত্র জ্যেষ্ঠতার কারণে কোন ব্যক্তি অধিকার হিসাবে তার পদোন্নতি দাবী করতে পারবেন না।
  • (৩) জ্যেষ্ঠতা তথা মেধার ভিত্তিতে পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে, তবে চাকুরীর বৃত্তান্ত সন্তোষজনক না হলে কোন ব্যক্তিকে পদোন্নতির জন্য বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে না।

কর্মসংস্থান ব্যাংকে শিক্ষানবিশদের নিয়োগ প্রক্রিয়া:

(১) কোন স্থায়ী শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য বাছাইকৃত ব্যক্তিকে

  • (ক) সরাসরিভাবে নিয়োগের ক্ষেত্রে, এক বৎসরের জন্য এবং
  • (খ) পদোন্নতির ক্ষেত্রে, উক্ত তারিখ হইতে ছয় মাসের জন্য শিক্ষানবিস নিয়োগ করা হবে ।

তবে শর্ত থাকে যে, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কারণ লিপিবদ্ধ করে কোন শিক্ষানবিসের শিক্ষানবিসি মেয়াদ এরূপে বৃদ্ধি করতে পারে যাতে বর্ধিত মেয়াদ সর্বসাকুল্যে এক বছরের অধিক না হয়।

(২) যে ক্ষেত্রে কোন শিক্ষানবিসি মেয়াদ চলাকালে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ মনে করে যে, তার আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক নয়, বা তার কর্মদক্ষতা হওয়ার সম্ভাবনা নাই, সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ—

  • (ক) সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে, শিক্ষানবিসের চাকুরী অবসান ঘটাতে পারবে এবং
  • (খ) পদোন্নতির ক্ষেত্রে, তাকে যে পদ হতে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল সে পদে প্রত্যাবর্তন করতে পারবে।

(৩) শিক্ষানবিসি মেয়াদ, বর্ধিত মেয়াদ থাকলে তা সহ সম্পূর্ণ হওয়ার পর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ—

  • (ক) যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, শিক্ষানবিসি চলাকালে কোন শিক্ষানবিসের আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক ছিল, তাহলে উপ-প্রবিধান (৪) এর বিধান সাপেক্ষে তাকে চাকুরীতে স্থায়ী করবে; এবং
  • (খ) যদি মনে করে যে, উক্ত মেয়াদ চলাকালে শিক্ষানবিসের আচরণ ও কর্ম সন্তোষজনক ছিল না, তাহলে উক্ত কর্তৃপক্ষ

(অ) সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে, তার চাকুরীর অবসান ঘটাতে পারবে এবং

(আ) পদোন্নতির ক্ষেত্রে, তাকে যে পদ হতে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল সে পদে প্রত্যাবর্তন করাতে পারবে।

(৪) কোন শিক্ষানবিসকে কোন পদে স্থায়ী করা হবে না, যদি না তিনি—

  • (ক) সস্তোষজনকভাবে শিক্ষানবিসি মেয়াদ সমাপ্ত করে থাকেন।
  • (খ) ব্যাংকের এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত বিভাগীয় পরীক্ষা (যদি থাকে) উত্তীর্ণ হন; এবং
  • (গ) এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত প্রশিক্ষণ (যদি থাকে) সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত করেন।

(৫) এই প্রবিধানমালা বলবৎ হবার তারিখে ব্যাংকের চাকুরীতে সরাসরি নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে যাদের চাকুরীর মেয়াদ এক বৎসর সমাপ্ত হয়েছে এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে যাদের নতুন পদে চাকুরীর মেয়াদ ছয় মাস সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত হয়েছে তাদের চাকুরী স্থায়ীকরণের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকে প্রেষণে নিয়োগ প্রক্রিয়া:

এখানে কর্মসংস্থান ব্যাংকে প্রেষণে নিয়োগ প্রক্রিয়া আলোচনা করা হলো।

তফসিলের বিধানাবলী সাপেক্ষে, ব্যাংকের কোন পদে প্রেষণে বদলীর মাধ্যমে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সরকার বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন উপযুক্ত কর্মচারীকে, ব্যাংক এবং সরকার বা ক্ষেত্রমত, সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরস্পরের মধ্যে স্থিরকৃত শর্তাধীনে, নিয়োগ করতে পারবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা:

কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা অনেক রয়েছে। তন্মধ্যে কর্মসংস্থান ব্যাংকে সাধারণত ১৩ বা ১৪ গ্রেড থেকে পরবর্তীতে ৫ অথবা ৬ গ্রেডে প্রমোশন পাওয়া যায়। যা অনেক চাকরিতে চিন্তাও করা যায় না। বর্তমানে ১৩ বা ১৪ গ্রডে ঢুকে ৫ বা ৬ গ্রেডে চাকরি করছেন এমন অনেক কর্মকর্তাই আছেন। অন্যান্য ব্যাংক থেকে এই ব্যাংকে প্রমোশন দ্রুত হয়।

একজন ১৩ নং গ্রেডে ঢুকে ১১০০০ টাকা বেসিকসহ প্রায় ৪০০০ টাকা লাঞ্চ ভাতা এবং প্রায় ২০০০ টাকার টিএ বিল পাবেন। এছাড়াও রয়েছে ইনসেন্টিভ এর সুবিধা। বিগত অর্থবছরে বেসিকের ১.৫ গুণ ইনসেন্টিভ দেওয়া হয় এ ব্যাংকে।এছাড়াও চাকরির ২ বছর পর মোটরসাইকেল লোন ও ৩ বছর পর কম্পিউটার লোনের সুবিধা রয়েছে। চাকরির ৫ বা ৬ বছর পর হাউজ লোনের সুবিধা রয়েছে। ১০ম গ্রেডের একজন অফিসার ৮০ লাখ টাকার মত হাউজ লোন পেয়ে থাকেন।

নিম্নে কর্মসংস্থান ব্যাংকের চাকরি সুবিধা যেমন ভ্রমন ভাতা, সম্মানী ভাতা, দায়িত্ব ভাতা এবং উৎসব ভাতার হার প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তুলে ধরছি।

ভ্রমন ভাতা:

কোন কর্মচারী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তার দায়িত্ব পালনার্থে ভ্রমণকালে, বা বদলী উপলক্ষে ভ্রমণকালে, সরকারের নির্দেশাবলীর আলোকে, ব্যাংক কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্ধারিত হার ও শর্তাবলী অনুযায়ী, ভ্রমন ভাতা ও দৈনিক ভাতা পাওয়ার অধিকারী হবেন।

সম্মানী ভাতা:

(১) ব্যাংক কোন কর্মচারীকে সাময়িক প্রকৃতির ও শ্রমসাধ্য কর্ম সম্পাদনের জন্য অথবা বিশেষ মেধার প্রয়োজন হয় এমন নব প্রবর্তনমূলক বা গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কর্ম সম্পাদনের জন্য সম্মানী হিসাবে নগদ অর্থ বা অন্য কোন পুরস্কার প্রদানের যৌক্তিকতা থাকলে উক্ত সম্মানী প্রদান করতে পারবে।

(২) এতদুদ্দেশ্যে গঠিত কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত না হলে উপ-প্রবিধান (১) এর অধীনে কোন সম্মানী বা পুরস্কার মঞ্জুর করা হবে না।

দায়িত্ব ভাতা:

কোন কর্মচারী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে কমপক্ষে একুশ দিনের জন্য তাহার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে সমমানের বা উচচতর কোন পদের দায়িত্ব পালন করলে, তাকে মূল বেতনের ২০% হারে দায়িত্বভাতা প্রদান করা হবে তবে, এতদসংক্রান্ত সরকারী নীতিমালা সাপেক্ষে, এই প্রবিধান অনুসরণ করা হবে।

উৎসব ভাতা:

সরকারী নির্দেশের আলোকে ব্যাংক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সময় সময় জারীকৃত আদেশ মোতাবেক ব্যাংক এর কর্মচারীগণকে উৎসব ভাতা প্রদান করা যেতে পারে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা:

এখানে কর্মসংস্থান ব্যাংকের গৃহ নির্মাণ ঋণ সুবিধা আলোচনা করা হলো।
এছাড়াও অন্যান্য ঋণ সুবিধাদিও এখানে অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

ব্যাংক তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জমি ক্রয়, গৃহ নির্মাণ, মোটর কার, কম্পিউটার ও মোটর সাইকেল ক্রয় করার জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সুদে ঋণের সুবিধাদি প্রদান করতে পারবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের অবসর গ্রহন সুবিধা:

কর্মসংস্থান ব্যাংকের অবসর গ্রহন সুবিধা
অনেক রয়েছে, নিম্নে পৃথক পৃথক ভাবে আলোচিত হলো।

সাধারণ ভবিষ্য তহবিল:

(১) ব্যাংক তার কর্মচারীগণের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক কর্মচারী সাধারণ ভবিষ্য তহবিল নামে একটি তহবিল গঠন করবে, যাতে প্রত্যেক কর্মচারী সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান করবে এবং এই তহবিল সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সরকার কর্তৃক প্রণীত General Provident Fund Rules, 1979 প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ প্রযোজ্য হবে ।

(২) উপ-প্রবিধান (১) এর বিধান সত্ত্বেও এই প্রবিধানমালা প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে বিদ্যমান ভবিষ্য তহবিল, অতঃপর উক্ত তহবিল বলে উল্লিখিত, এই প্রবিধানের অধীনে গঠিত হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং উক্ত তহবিলে উক্তরূপ প্রবর্তনের পূর্বে প্রদত্ত চাঁদা ও উহা হতে গৃহীত অসীমসহ যাবতীয় কার্যক্রম এই প্রবিধানমালার অধীনে সম্পাদিত হয়েছে বলিয়া গণ্য হবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের আনুতোষিক সুবিধা:

নিম্নবর্ণিত কর্মচারীগণ আনুতোষিক পাওয়ার অধিকারী হবেন।

(ক) যিনি ব্যাংক এর চাকুরীতে কমপক্ষে তিন বৎসর অব্যাহতভাবে চাকুরী করেছেন এবং শাস্তিস্বরূপ চাকুরী হতে বরখাস্ত, পদচ্যূত বা অপসারিত হন নাই বা যাদের চাকুরীর অবসান ঘটানো হয় নাই।

(খ) কমপক্ষে তিন বৎসর অব্যাহত চাকুরী করার পর যিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতিসহ চাকুরী হতে পদত্যাগ বা চাকুরী ত্যাগ করেছেন।

(গ) তিন বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে নিম্নবর্ণিত কোন কারণে যে কর্মচারীর চাকুরীর অবসান হয়েছে, যথা :-

  • (অ) তিনি যে পদে নিযুক্ত রয়েছেন সে পদ বিলুপ্ত হয়েছে অথবা পদের সংখ্যা হ্রাসের কারণে তিনি চাকুরী হতে ছাঁটাই হয়েছেন;
  • (আ) সম্পূর্ণ বা আংশিক অসামর্থ্যের কারণে তাকে চাকুরী হতে বরখাস্ত বা অপসারিত করা হয়েছে অথবা
  • (ই) চাকুরীতে থাকাকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

(২) কোন কর্মচারীকে তার চাকুরীর প্রত্যেক পূর্ণ বৎসর বা উহার আংশিক বৎসরের ক্ষেত্রে একশত বিশ কার্যদিবস তদুর্ধ্ব কোন সময়ের চাকুরীর জন্য দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ হারে আনুতোষিক প্রদান করা হবে।

(৩) সর্বশেষ গৃহীত বেতন আনুতোষিক গণনার মূল ভিত্তি হবে।

(৪) কোন কর্মচারীর মৃত্যুর কারণে আনুতোষিক প্রাপ্য হলে যাতে তার মনোনীত ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ উহা পাওয়ার অধিকারী হন সেজন্য প্রত্যেক কর্মচারী ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়নদান করবেন এবং ফরমটি ব্যাংক কর্তৃক নির্দেশিত কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিবেন।

(৫) কোন কর্মচারী উপ-প্রবিধান (৪) অনুযায়ী একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়নদান করিলে মনোনয়নপত্রে তাদেরকে প্রদেয় অংশ এরূপে উল্লেখ করবেন যেন আনুতোষিকের সম্পূর্ণ টাকা উহাতে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং যদি এইরূপ উল্লেখ করা না হয় তাহলে টাকার পরিমান মনোনীত ব্যক্তিগণকে সমান অংশে ভাগ করে দেওয়া হবে।

(৬) কোনো কর্মচারী যে কোন সময়ে লিখিত নোটিশ দ্বারা উক্ত মনোনয়নপত্র বাতিল করতে পারবেন এবং বাতিল করার পর উক্ত নোটিশের সহিত উপ-প্রবিধান (৪) ও (৫) এর বিধান অনুসারে একটি নূতন মনোনয়নপত্র জমা দিবেন।

(৭) কোন কর্মচারী মনোনয়নপত্র জমা না দিয়া মৃত্যুবরণ করলে তার আনুতোষিকের টাকা উত্তরাধিকারী প্রমানপত্রের ভিত্তিতে তার বৈধ ওয়ারিশ বা ওয়ারিশগণকে প্রদান করা হবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকের অবসর ভাতা ও অবসরজনিত সুবিধাদি:

কর্মসংস্থান ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি সুবিধা হলো অবসর ভাতা ও অবসরজনিত সুবিধাদি।

(১) ব্যাংক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, লিখিত আদেশ দ্বারা অবসর ভাতা ও অবসরজনিত সুবিধাদি পরিকল্প প্রবর্তন করতে পারবে এবং এরূপ পরিকল্প প্রবর্তন করা হলে তৎসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সরকারী কর্মচারীগণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিমালা ও সরকার কর্তৃক সময় সময় জারীকৃত আদেশ বা নির্দেশ, প্রয়োজনীয় অভিযোজনসহ, প্রযোজ্য হইবে।

(২) উপ-প্রবিধান (১) এ উল্লিখিত পরিকল্প চালু করা হলে প্রত্যেক কর্মচারী ব্যাংক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে উক্ত পরিকল্পের আওতাধীন হবার বা না হবার ইচছা জ্ঞাপন করে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অবহিত
করবেন।

(৩) উপ-প্রবিধান (১) এ উল্লিখিত বিধানানুযায়ী ইচ্ছা প্রকাশ করা হলে তাহা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

(৪) ব্যাংক এর সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে, তার পূর্বতন চাকুরীকাল অবসর ভাতা ও অবসরজনিত সুবিধাদি প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে গণনাযোগ্য চাকুরীকাল হিসাবে গণ্য করা হবে।

(৫) ব্যাংক এর স্থায়ী কর্মচারীবৃন্দ সরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার কর্মচারী কল্যাণ তহবিল ও যৌথ বীমা তহবিলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান করবেন এবং এতদুদ্দেশ্যে ১৯৮২ সালের ৩৯ নং অধ্যাদেশ এ বর্ণিত বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

কর্মসংস্থান ব্যাংকে অবসর গ্রহণ, চাকুরী অবসানের নিয়মকানুন:

অবসর গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে Act XII of 1974 এর প্রয়োগ হবে।

(১) কর্মচারীদের অবসর গ্রহণ এবং তাহাদের পুন:নিয়োগের ব্যাপারে Public Servants (Retirement) Act, 1974 (XII of 1974) এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হবে।

(২) এই প্রবিধানে ভিন্নরূপ যাই থাকুক না কেন, ব্যাংক কোন কারণ প্রদর্শন ব্যতিরেকে এক মাসের অগ্রীম নোটিশ প্রদান করে অথবা উক্ত নোটিশের পরিবর্তে এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমান অর্থ পরিশোধ করে কোন শিক্ষানবিসের চাকুরীর অবসান ঘটাতে পারবেন এবং শিক্ষানবিস তার চাকুরী অবসানের কারণে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ পাবেন না।

ইস্তফাদান:

(১) কোন কর্মচারী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট তার অভিপ্রায় উল্লেখপূর্বক তিন মাসের লিখিত পূর্ব নোটিশ প্রদান না করে তার চাকুরী ত্যাগ করতে বা চাকুরী হতে বিরত থাকতে পারবেন না এবং এরূপ নোটিশ প্রদানে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে, তিনি ব্যাংককে তার তিন মাসের বেতনের সমপরিমান টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।

(২) কোন শিক্ষানবিস তার অভিপ্রায় উল্লেখপূর্বক এক মাসের লিখিত পূর্ব নোটিশ প্রদান না করে তার চাকুরী ত্যাগ করতে পারবেন না এবং এরূপ নোটিশ প্রদানে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে, তিনি ব্যাংককে তার এক মাসের বেতনের সমপরিমান টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।

(৩) যে কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃংখলাজনিত ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে তিনি চাকুরীতে ইস্তফাদান করতে পারবেন না।

তবে শর্ত এই যে, পরিচালনা বোর্ড যেরূপ যথাযথ বলে বিবেচনা করবে সেরূপ শর্তে ব্যাংক কোন কর্মচারীকে ইস্তফাদানের অনুমতি দিতে পারবে।

হেফাজত:

এই প্রবিধানমালা প্রবর্তনের পূর্বে নিয়োগ ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই প্রবিধানমালার অধীন নিয়োগ ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েছে বলে গণ্য হবেন।

কর্মসংস্থান ব্যাংকে চাকরি অসুবিধা:

কর্মসংস্থান ব্যাংকের অনেক সুবিধার পাশাপাশি এ ব্যাংকের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। নিম্নে কর্মসংস্থান ব্যাংকে চাকরি অসুবিধা আলোচনা করা হলো।

এ ব্যাংকে যেহেতু বেশির ভাগ টাইম ফিল্ড লেভেলে কাজ করতে হয় যেটা অনেকে পছন্দ করলেও অধিকাংশেরই অপছন্দ।আপনাকে ডেস্ক এবং ফিল্ড দুই জায়গাতেই কাজ করতে হবে। এমনকি ডাটা এন্ট্রি অফিসারে ঢুকেও আপনাকে ফিল্ডে যেতে হবে। লোন দেওয়া যতটা সুখকর কাজ লোন আদায় করা ঠিক ততটাই কঠিন কাজ। খেলাপি ঋণ আদায়ে যথেষ্ট প্রেসার ফিল করবেন ব্যাংকে।

আপনি যদি কর্মতৎপর হয়ে থাকেন, ঘুরতে পছন্দ করেন, প্রেসার নিতে পারেন, সব ধরনের মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করেন তাহলে এই চাকরিটি আপনার। যদি এগুলো নাও পারেন তবুও আপনি কাজ করতে করতে শিখে যাবেন। বর্তমানে এই কঠিন চাকরির বাজারে আমি মনে করি এটা অনেক বড় সু্যোগ।একবাড়ে কিছু না থাকার থেকে ১ টি ১৩ বা ১৪ নং গ্রেডের চাকরি অনেক ভাল।এখানে ঢুকে পরবর্তীতে অন্যান্য চাকরির জন্য চেষ্টা করতে পারবেন। যদিও কষ্টকর কিন্তু চাকরি পাওয়ার পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তাই এ চাকরির অসুবিধার চেয়ে সুবিধাই বেশি বলে মনে করি।

কর্মসংস্থান ব্যাংক কি সরকারি?

না, কর্মসংস্থান ব্যাংক হলো একটি বিশেষায়িত অতফসিলি ব্যাংক।

সর্বশেষ কথা:

এতক্ষণে আমরা আপনাদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা বা কর্মসংস্থান ব্যাংক সুবিধা অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনাদের পোস্টটি ভাল লাগবে। এই পোস্টের নিয়োগ বিধিমালা কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে তথ্য উপাত্তের আলোকে পেশ করা হয়েছে। ধন্যবাদ

Visited 16 times, 1 visit(s) today

InfoZoneBD Editor

এই ব্লগ সাইটের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন জানা ও অজানা সকল তথ্য জানতে পারবেন। আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, এই ওয়েবসাইটের প্রতিটি তথ্য আপনার দৈনন্দিন জীবনে অনেক সাহায্য করবে। এই সাইটের সমস্ত তথ্য বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। তাই প্রতিদিন আমাদের বাংলার ব্লগস সাইটের প্রতিটি পোস্টে চোখ রাখুন।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page