শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ নীতিমালা 2023 | কিভাবে ইন্টার্নশিপ করবেন | সুযোগ সুবিধা

অনার্স-মাস্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সমাজের প্রয়োজনের সাথে শিক্ষাকে সংগতিপূর্ণ করার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছা প্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে দেশের যুবসমাজ এবং অনার্স-মাস্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ _ কিভাবে ইন্টার্নশিপ করবেন _ সুযোগ সুবিধা
শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ _ কিভাবে ইন্টার্নশিপ করবেন _ সুযোগ সুবিধা

ইন্টার্নশিপ বলতে কি বুঝায়?

ইন্টার্ন অর্থ হলো ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী সরকারি/ আধাসরকারি/ স্বায়ত্তশাসিত কিংবা অন্য কোনো প্রকার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে যারা ইন্টার্নশিপ প্রদান করে সেসব প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহণকারী অনার্স বা মাস্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বুঝায়।

অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সময়ে বা খণ্ডকালীন একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থেকে, সেই প্রতিষ্ঠানের কাজ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করাই হচ্ছে ইন্টার্নশিপ।

আরো পড়ুন: ১০০% নির্ভুল (ব্যাখ্যাসহ পিডিএফ) প্রথম ধাপের প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক প্রশ্ন সমাধান 2023

ইন্টার্নশিপ নীতিমালা প্রদানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ প্রনয়ণের অনেক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে। নিম্নে প্রদানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আলোচনা করা হলো।

  • (ক) ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও অভিজ্ঞ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ এর মূল লক্ষ্য।
  • (খ) পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের সাথে কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানো।
  • (গ) সরকারি দপ্তরের কাজের সাথে পরিচিত হয়ে ভবিষ্যতে প্রজাতন্ত্রের সেবায় নিয়োজিত হতে উৎসাহ প্রদান করাই হলো ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচিত।

যারা ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন:

ইন্টার্নশিপে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারেন না। আবার সবার প্রয়োজনও হয়না। তাই ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ অনুযায়ী যারা করতে পারবেন তাদের তালিকা দেখে নিন।

  • (ক) এই নীতিমালা বাংলাদেশের সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন।
  • (খ) বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন।
  • (গ) বিশ্ববিদ্যালয়/ সমমানের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিচালিত ইন্টার্নশিপ এই নীতিমালার আওতাভুক্ত হবে না।
  • (ঘ) সামরিক/বেসামরিক/আধাসামরিক সকল প্রকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, সরকার কর্তৃক ঘোষিত কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন (কেপিআই) স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কর্মে ইন্টার্নশিপ প্রদান করা যাবে না।

ইন্টার্নশিপ এ কিভাবে আবেদন করবেন

ইন্টার্নশিপে আবেদন করার জন্য আপনার কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। তাই নির্দিষ্ট যোগ্যতা অর্জন করে ইন্টার্নশিপে আবেদন করতে হয়। নিম্নে আবেদনকারীর যোগ্যতা কি কি লাগবে তা দেখে নিন। ইন্টার্নশিপ প্রার্থীর আবেদন করার যোগ্যতা নিম্নরূপ:

  • (ক) প্রার্থীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • (খ) প্রার্থীকে কমপক্ষে স্নাতক/সমমানের ডিগ্রিধারী হতে হবে (অবতীর্ণ প্রার্থীসহ)।
  • (গ) স্নাতক/স্নাতকোত্তর/সমমানের ডিগ্রি অর্জনের ২ (দুই) বৎসরের মধ্যে আবেদন করতে হবে এবং
  • (ঘ) একজন প্রার্থী একবার সরকারি অফিসে ইন্টার্নশিপ করতে পারবে।

আরো পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা ২০২৩ | এক নজরে সকল তথ্য 2023-24

ইন্টার্ন বাছাইয়ের ভিত্তি ও প্রক্রিয়া

আবেদনকারীদের বাছাইয়ের কিছু ভিত্তি ও প্রক্রিয়া রয়েছে।

(ক) ইন্টার্ন বাছাইয়ের ভিত্তি

  • (i) মেধার ভিত্তিতে;
  • (ii) বিষয় সংশ্লিষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত); এবং
  • (iii) আবেদনকারীর ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্র বাছাইয়ের প্রেক্ষাপট এবং এক্ষেত্রে তাহার সম্ভাব্য অবদানের বর্ণনার ভিত্তিতে।

(খ) বাছাই প্রক্রিয়া

সুষম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিম্নবর্ণিত ধাপগুলি অনুসরণপূর্বক ইন্টার্ন বাছাই করতে হবে:

  • (i) এই নীতিমালার আলোকে প্রতিটি মন্ত্রণালয় তার ও তার অধীন দপ্তর/সংস্থা/ প্রতিষ্ঠানের অধিক্ষেত্র বিবেচনায় প্রত্যেক অর্থ বছরের জন্য ইন্টার্নশিপের সুযোগের সংখ্যা নির্ধারণ করবে।
  • (ii) দপ্তর/ সংস্থা/ বিদ্যমান সুযোগের বিপরীতে ইন্টার্নশিপ প্রদানের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
  • (iii) ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী সংস্থা/প্রতিষ্ঠান ইন্টার্ন বাছাইপূর্বক নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় বরাবর মনোনয়নের অনুমতি গ্রহণ করবে।
  • (iv) বিজ্ঞপ্তিতে অন্যান্য তথ্যের সাথে ইন্টার্নশিপের স্থান, সংখ্যা, মেয়াদকাল, বিশেষ দক্ষতা, ভাতা (যদি থাকে), বাছাই প্রক্রিয়া প্রভৃতি বিষয় উল্লেখ করতে হবে।
  • (V) ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ৩-৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি বাছাই কমিটি গঠন করবে; বাছাই কমিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রয়োজনের বিষয় বিবেচনা করে বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নির্ধারণপূর্বক ইন্টার্ন বাছাই করবে এবং
  • (vi) নারী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর আবেদনকারীগণকে এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে।

ইন্টার্নশিপের মেয়াদকাল

ইন্টার্নশিপের মেয়াদকাল সর্বনিম্ন ৩ (তিন) হতে ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত হতে পারবে যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করিবে।

ইন্টার্নশিপ করতে কত খরচ হয়

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে আলাদা অর্থনৈতিক কোড সৃজন করবে। অর্থ বিভাগের অনুমোদন/ বাজেট বরাদ্দ থাকা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক কোড হতে ইন্টার্নশিপের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করবে।

ইন্টার্নশিপের ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা

ইন্টার্নশিপ করলে সরকার থেকে কত ভাতা পাওয়া যাবে তা জেনে নিন।

  • (ক) ইন্টার্ন প্রতিমাসে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণ ভাতা প্রাপ্য হবে।
  • (খ) ক্রমিক ‘ক’ এ বর্ণিত ভাতা ব্যতিরেকে ইন্টার্ন অন্য কোনো ভাতা/সুবিধা প্রাপ্য হবে না।
  • (গ) ভাতা প্রাপ্তির প্রাক্কালে প্রতিমাসে ইন্টার্নকে তাহার সন্তোষজনক কর্মকালের বিষয়ে সুপারভাইজারের নিকট হতে প্রত্যয়ন সংগ্রহ করতে হবে।
  • (ঘ) ইন্টার্নশিপ চলাকালীন ইন্টার্ন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে কর্মে নিযুক্ত রয়েছে মর্মে কোনোরূপ প্রত্যয়ন প্রাপ্য হবে না; সফলভাবে সম্পন্ন করার পর ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হতে সনদ প্রাপ্য হবে।
  • (ঙ) ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করা কোনোভাবেই কোনো প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী, অস্থায়ী বা অন্য কোনো প্রকার চাকরির ক্ষেত্রে প্রাধিকার/অগ্রাধিকার হিসাবে গণ্য হবে না।

ইন্টার্নশিপে যোগদানের শর্তসমূহ

ইন্টার্নশিপে যোগদানের কিছু শর্ত রয়েছে।

ইন্টার্নশিপে যোগদানের সময় অন্যান্য কাগজপত্রের সাথে আবশ্যিকভাবে নিম্নোক্ত কাগজপত্র জমা করতে হবে:

  • (i) সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে তার মৌলিক যোগ্যতা ও অন্যান্য গুণাবলির বর্ণনা- সংবলিত প্রত্যয়ন;
  • (ii) স্নাতক/ স্নাতকোত্তর/ সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণের সনদ, অথবা উক্তরূপ পরীক্ষাসমূহে অবতীর্ণ হওয়ার প্রত্যয়ন (যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক) পত্রের কপি;
  • (iii) জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি; এবং
  • (iv) অন্য কোনো কর্মে নিয়োজিত থাকলে প্রয়োজনীয় অনাপত্তি সনদ।

অতএব, কর্মে যোগদানের পূর্বে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন মনে করলে ইন্টার্নের পুলিশ ভেরিফিকেশন করাতে পারবে।

ইন্টার্নশিপের অব্যাহতি/ অবসান

নিম্নবর্ণিত যে কোনো কারণে একজন ইন্টার্নের ইন্টার্নশিপ বাতিল/অবসান হতে পারে:

  • (i) কাজের মান সন্তোষজনক না হলে অব্যাহতি প্রদান করা।
  • (ii) আচরণ সরকারি সেবা প্রদানের প্রচলিত রীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে অবসান করা।
  • (iii) রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে ইন্টার্নশিপ বাতিল করা।
  • (iv) দেশে প্রচলিত আইনের দ্বারা নির্ধারিত কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকলে।
  • (V) পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কাজে অনুপস্থিত থাকলে।
  • (vi) কর্তৃপক্ষের কোনো আইনসংগত দাপ্তরিক আদেশ অমান্য করলে।

তাই একজন ইন্টার্ন নিজ দায়িত্ব হতে অব্যাহতি চেয়ে সুপারভাইজারের মাধ্যমে ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বরাবর ইন্টার্নশিপ হতে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারবে।

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ চলাকালীন যে- কোনো সময় উপরে বর্ণিত কারণে অথবা অন্য যে কোনো যথাযথ কারণ উল্লেখপূর্বক অথবা কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে বাতিলের অধিকার সংরক্ষণ করবে।

ইন্টার্নের দায়িত্ব, কার্যাবলি ও দায়বদ্ধতা

ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহণকারী ইন্টার্নের দায়িত্ব, কার্যাবলি ও দায়বদ্ধতা নিম্নরূপ:

  • (ক) সুপারভাইজার কর্তৃক অর্পিত সকল দাপ্তরিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা।
  • (খ) ইন্টার্ন প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট সকল আইন, বিধি, প্রবিধি, নীতিমালা ইত্যাদি মেনে চলা।
  • (গ) সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের তথ্যের নিরাপত্তা’ ও গোপনীয়তার স্বার্থে এবং প্রয়োজনীয় অফিস সরঞ্জামাদি সুরক্ষার লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট ঘোষণাপত্রে (সংলগ্নি-ক) স্বাক্ষর করবে।

সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ও কার্যাবলি

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় অনুমোদন প্রদান এবং সামগ্রিক ইন্টার্নশিপ কার্যক্রম তদারকি ও মূল্যায়ন করা।

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কার্যাবলি

ইন্টার্নশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিম্নরূপ:

  • (ক) ইন্টার্নশিপ-এর চাহিদা/যৌক্তিকতা নিরূপণ করা।
  • (খ) ইন্টার্নের কর্মের সুনির্দিষ্ট শর্তাবলী নির্ধারণ করা।
  • (গ) ইন্টার্নশিপের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ, বাজেট নির্ধারণ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন গ্রহণ ও বাছাই কমিটি গঠন; বাছাই কমিটির সুপারিশক্রমে ইন্টার্ন মনোনয়ন করা।
  • (ঘ) সরকারি বেতনস্কেলের ৯ম গ্রেডের নিম্নে নয় এবং সরকারি কর্মে ন্যূনতম ৫ (পাঁচ) বৎসরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন কর্মকর্তাকে সুপারভাইজার নিয়োগ প্রদান করা।
  • (ঙ) দাপ্তরিক ও প্রাসঙ্গিক পেশাভিত্তিক কাজে প্রয়োজনীয় সুযোগ সৃষ্টি করে ইন্টার্নদের নিয়োজিত করা, যাতে তারা সরকারি পেশাগত জ্ঞান, কাজের ধরন ও কর্মদক্ষতা অর্জন করতে পারে।
  • (চ) ইন্টার্নদের কাজের প্রয়োজনীয় সাপোর্ট নির্ধারণ করা; যেমন: কাজের জায়গা, প্রয়োজনীয় আসবাব, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম, বিভিন্ন উপকরণ ইত্যাদি।
  • (ছ) ইন্টার্নদের যথাপোযুক্ত কর্ম পরিবেশ ও নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করা। এসংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণের লক্ষ্যে নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়সমূহ ন্যূনতম যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে ০৩ (তিন) সদস্যবিশিষ্ট ‘অভিযোগ নিষ্পত্তিকরণ কমিটি’ গঠন করবে।
  • (জ) সফলভাবে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করিবার পর ইন্টার্নকে সনদ প্রদান। ইন্টার্নশিপ শেষে ইন্টার্ন কর্তৃপক্ষ সনদ প্রদানে অস্বীকৃতি জানাইলে অথবা এই বিষয়ে অন্যকোনরূপ জটিলতার উদ্ভব হইলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আপিল কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিবেচিত হবে। এ ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ-১৪ (ছ) এ বর্ণিত কমিটি আপিল নিষ্পত্তি করবে।
  • (ঝ) বিশেষ পরিস্থিতিতে (অসুস্থতা, ব্যক্তিগত সমস্যা ইত্যাদি) ইন্টার্নশিপ শেষ করিতে না পারলে প্রমাণক সাপেক্ষে ইন্টার্নশিপ কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ ০২ (দুই) মাস পর্যন্ত ছুটি মঞ্জুর করবে। দুই মাসের অতিরিক্ত সময় অতিবাহিত হলে ইন্টার্নের ইন্টার্নশিপে যোগদানের সুযোগ থাকবে না। ছুটিকালীন ভাতা দাবি করা যাবে না।

ইন্টার্নশিপে দায়িত্বরত সুপারভাইজারের দায়িত্ব ও কার্যাবলি

সুপারভাইজার অর্থ হলো একজন ইন্টার্নের ইন্টার্নশিপ সংশ্লিষ্ট কার্যাবলির তদারকি কর্মকর্তা। ইন্টার্নশিপে দায়িত্বরত সুপারভাইজারের দায়িত্ব ও কার্যাবলি নিম্নে তুলে ধরা হলো।

সুপারভাইজার নিম্নলিখিত কার্যসমূহ সম্পাদন করবেন:

  • (ক) দাপ্তরিক কার্যক্রমের সাথে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামকে সমন্বয় করে ইন্টার্ন-কে বিভিন্ন দায়িত্ব/কার্যাবলি প্রদান করা।
  • (খ) ইন্টার্নদের সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং কাজের মূল্যায়ন করা।
  • (গ) আচরণ ও কাজের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সময়ে সময়ে ইন্টার্ন-এর সাথে আলোচনা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা।

বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহের ক্ষেত্রে নীতিমালার প্রযোজ্যতা

(ক) বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়/ মন্ত্রণালয়সমূহের তত্ত্বাবধানে যথোপযুক্ত ইন্টার্নশিপ নীতিমালা প্রণয়ন করবে। স্মর্তব্য, সরকার এই নীতিমালার মাধ্যমে বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও ইন্টার্নশিপ কার্যক্রমকে উৎসাহিত করবে এবং এ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে।

(খ) বেসরকারি শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসমূহ তাহাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী ইন্টার্নদের ভাতা, ইন্টার্নশিপের মেয়াদ ও অন্যান্য বিষয়াদি নির্ধারণ করিতে পারবে।

(গ) এফবিসিসিআই ও সংশ্লিষ্ট শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠন ইন্টার্নশিপের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত পরিবীক্ষণ ও নির্দেশনা প্রদান করবে।

শেষকথা:

উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বর্তমান জনবান্ধব সরকার দেশের সকল নাগরিককে সুদক্ষ করে গড়ে তোলার যে ইন্টার্নশিপ নীতিমালা ২০২৩ প্রণয়ন করেছে তা প্রশংসার দাবিদার। তাই আমি আপনাদের জন্য ইন্টার্নশিপ সম্পর্কিত সকল তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করলাম। ধন্যবাদ

Visited 7 times, 1 visit(s) today

Leave a Comment

You cannot copy content of this page